Ghulam Husayn Satpuri
আলহাজ হজরত শাহ গোলাম হোসেন সৎপুরী সাহেব ওরফে কটা মিঞা (Arabic: حضرت مولانا الحاج شاہ غلام حسین بن حسن علی بن غلام نبی بن شاہ جمشیر بن شاہ باسط الستپوری عرف کٹا میاں) ছিলেন শ্রীহট্ট-জালালাবাদের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি লামাকাজী এলাকার ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসা-ই-আলিয়া (হাসনিয়া) সৎপুর প্রতিষ্ঠানের বানী ও আউয়াল মহতমিম। তিনি ১৯২০ খ্রীষ্টাব্দের ৮ আগস্ট তারীখে লামাকাজীস্থ সৎপুর গাঁয়ের সুনামধন্য পীর বংশে পয়দা হয়েছিলেন। উনার নসবনামা নিম্নস্বরূপঃ হজরৎ আলহাজ শাহ গোলাম হোসেন বিন হাসন আলী বিন আলহাজ গোলাম নবী বিন শাহ জমশের বিন শাহ বাসেত। এবং শাহ বাসেত সাহেবের নসব পৌছে শাহ মহম্মদ পর্যন্ত। হজরত শাহ জালাল মজঃরদ কুনিয়ায়ী সাহেব যখন শ্রীহট্টে এসেছিলেন তখন শাহ মহম্মদ মোসলমান হয়েছিলেন উনার দস্তে। গোলাম হোসেন সৎপুরী সাহেব ছিলেন পীর হাসন আলী সৎপুরী এবং খদীজা বেগমের ছয় সন্তানদের পাঁচ নম্বর। তাইনর তিন বোইন আছিল। তাইনর ছোট ভাই আলহাজ মৌলবী গোলাম হাফেজ সৎপুরী খুব আল্লাওয়ালা মানুষ আছলা। গোলাম হোসেন সৎপুরী সাহেব মায়ের গেছ থাকি হুরুকাল থাকি নমাজর তরবিয়ৎ আর তহজ্জুদর তাগিদ পাইছলা। তাইনর ওয়ালেদা খদীজা বেগম সাহেবা বেশি কাজ কইতা ফজরের নমাজ মসজিদে পড়বার লাগি। মায়ের গেছ থাকি বহুত্তা শিখিয়া গোলাম হোসেন সৎপুরী স্থানীয় লামাকাজী মাদ্রাসায় ভর্তি হৈলা। সেখানে তিনি লামাকাজী মাদ্রাসার অন্যতম উস্তাদ নেয়ামতুল্লাহ গোবিন্দনগরী (ছাতক) সাহেবের লগে তালীম লৈছিলা। এর বাদে শাহ গোলাম হোসেন উচ্চ তালীমর লাগিয়া গেছলা মাদ্রাসা-ই-আরবিয়া হোসেনিয়া (ঢাকাউত্তর-রানাপিং মাদ্রাসা) আর তার বাদে সিলেট সরকারী মাদ্রাসা-ই-আলিয়া। সেসময় ভালা ছাত্রদের লাগিয়া কাদেরিয়া বৃত্তি দেওয়া হইত। শাহ গোলাম হোসেন সিলেট আলিয়া মাদ্রাসার কাদেরিয়া বৃত্তি পাইছলা। ১৯৪৫ খ্রীষ্টাব্দে তাইন সিলেট থাকি কামিল-এ-হাদীছ স্বর্ণপদকসহ ফারেগ হইলা। ইমতেহানের বাদেও শাহ গোলাম হোসেন সৎপুরী সাহেব হাফেজ আব্দুল ওহাব মীরপুরী সাহেবের লগে হেফজ্-ই-কুরআন শুরূ করছিলা। মীরপুরী সাহেবের লগে তাইন ১৮ পারা মুখস্ত করছিলা। সৎপুরী সাহেব সুফীবাদর একজন মুরীদও আছলা। তাইন খাজাঞ্চী এলাকার পীর হামীদুল্লাহ কাইমগঞ্জী সাহেবের দস্তে বইয়ৎ হৈছিলা। তাইনর ইন্তেকালের বাদে সৎপুরী সাহেব বাদেদেওরাইল পরগণার পীর আব্দুল লতীফ চৌধুরী ফূলতলী সাহেবের দস্তে বইয়ৎ হৈছিলা।
সিলেট মাদ্রাসা থাকি ফারেগ হৈয়া, নিজর মাদ্রাসা কায়েম করার কাম শুরু করলা। তাইনর পহেলা দুই শাগরেদ আছলা মামাতো ভাই মওলানা আব্দুস সলাম তেলীকোনী (সৎপুর কামিল মাদ্রাসার পরবর্তীর একজন মহতমিম আর উস্তাদ) এবং ভাইগ্না মখলেসুর রহমান। হিসময় মাদ্রাসা আছিল না, শাহ গোলাম হোসেনের বাড়ীর কান্দাত মসজিদে তখন পড়ানি হইত। ১৯৪৮ অর্থাৎ তিন বছর বাদে তাইন্ সৎপুর গাঁওত ওয়ালেদে মহতরম পীর হাসন আলীর নামানুসারে মাদরাসা-ই-আলিয়া হাসনিয়া প্রতিষ্ঠা করছিলা। ১৯৫২ খ্রীষ্টাব্দে হজ্জ থাকি ফিরিয়া শাহ গোলাম হোসেন মাদ্রাসাত পহেলা জলসার আয়োজন করছিলা। জলসা-ই-আউয়ালের প্রধান মেহমান আছলা মমতাজুল মহদ্দিছীন আল্লামা হরমুজুল্লাহ শয়দা সাহেব। পীর ও মোর্শেদ আলহাজ হামীদুল্লাহ কাইমগঞ্জীর নসীহতে মাদ্রাসার নাম বদলানি হয়, নয়া নাম দিলা সৎপুর আলীয়া মাদ্রাসা। ২৫ নভেম্বর ১৯৫৮ (দাখিল স্বীকৃতি), ২৩ জানুয়ারী ১৯৬০ (আলিম স্বীকৃতি), ১২ জুন ১৯৬২ (ফাজিল স্বীকৃতি) আর অবশেষে সৎপুর কামিল মাদ্রাসা ১৮ ফেব্রুয়ারী ১৯৬৫। কামিল স্টেটাস পাইবার সময় মাদ্রাসার হাদীছের ওস্তাদগণ আছলা আল্লামা হবিবুর রহমান (মহতমিমে ইছামতী), মওলানা আব্দুল জব্বার গোটারগ্রামী, মওলানা মতঃহির আলী, মওলানা ইজ্জতুল্লাহ জয়নগরী, মওলানা রফীক আহমদ ইত্যাদি। মাঝে মাঝে পীর সাহেব আব্দুল লতীফ চৌধুরী ফুলতলী এবং মমতাজুল মহদ্দিছীন আল্লামা হরমুজুল্লাহ শয়দা সাহেব এই মাদ্রাসায় দরস-ই-হাদীছ দিতা। আলহাজ হজরত শাহ গোলাম হোসেন সৎপুরী সাহেব ওরফে কটা মিঞা শাদী করছিলা চাইর বার। পহেলা হরিপুরের জনৈক মহিলাকে শাদী করছিলা কিন্তু তাইন ইন্তেকাল করছিলা। দোসরা বিয়া করছিলা জনাব নেয়ামতুল্লাহ তেলীকোনীর সাহেবজাদীকে। তাইনর লগে এক ছেলে হৈছিল যার নাম মওলানা আবূ সয়ীদ মহম্মদ গেলমান। তেসরা বিয়া করছিলা জনাব মওলানা আসদ আলী করপাড়ীর সাহেবজাদীকে। তাইনর লগে এক মেয়ে আর এক ছেলে হৈছিল যার নাম মৌলবী আবুল ফত্তাহ মহম্মদ সলমান। চৌঠা বিয়া করছিলা হাজারীগাঁয়ের জনৈক মহিলাকে। তাইনর লগে তিন মেয়ে আর এক ছেলে হৈছিল যার নাম মওলানা আবূ জাফর মহম্মদ নোমান যেইন বর্তমান মাদ্রাসার মহতমিম।
This Bangladeshi biographical article is a stub. You can help EverybodyWiki by expanding it.